Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযোদ্ধে আনসার বাহিনীর অবদান

১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইতিহাসের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আনসার বাহিনী উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। যা নিচে বর্ণনা করা হলো।

ক। মহান ভাষা আন্দোলন: জাতি হিসেবে আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীনতা, নিজস্ব পতাকা, প্রিয় স্বাধীন বাংলাদেশ। এর বীজ প্রোথিত হয়েছিল ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনে। সে আন্দোলনে অন্যদের সঙ্গে শহীদ হয়েছেন ময়মনসিংহের আনসার প্লাটুন কমান্ডার আবদুল জব্বার। যার আত্মত্যাগ ও অবদানে এ বাহিনী গর্বিত।

খ। ১৯৫৪ ও ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালন: ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে ৭০,০০০ আনসার সদস্য এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ১,২০,০০০ আনসার সদস্য নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতে দায়িত্ব পালন করে।

গ। পাক ভারত যুদ্ধে আনসার ভিডিপি সদস্যদের বিওপিতে দায়িত্বপালন: ১৯৬৫ সালে ঐতিহাসিক পাক ভারত যুদ্ধের সময় দেশের সীমান্ত ফাড়িগুলোতে তৎকালীন ইপিআর এর সাথে আনসার বাহিনীকে বিওপি প্রতিরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়।

 

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আনসার বাহিনীর ভূমিকাঃ

আনসার সদস্যদের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং আনসার বাহিনী চল্লিশ হাজার ৩০৩ রাইফেল প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রথম হাতিয়ার। ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষনার পর পরই আনসার বাহিনীর বিভিন্ন পদবীর কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ অসংখ্য আনসার সদস্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৯৭১ সালে সারাদেশে আনসার বাহিনীর প্রশিক্ষণ চলছিল। এসব প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ব্যবহার হচ্ছিল আনসারদের সব রাইফেল। প্রশিক্ষণ শেষে রাইফেল পুলিশ কোতে জমা দেয়ার কথা থাকলেও কোন কোন স্থানে অল্প বা কোথাও কোনো রাইফেলই জমা দেয়া হয়নি। বরং ২৫ মার্চের আক্রমণের পরই পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে আনসারদের ৪০,০০০ রাইফেল মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী আনসার ও অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ অস্ত্র দিয়েই মূলত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ পর্ব শুরু হয়।


মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে আগ্রহী যুবকদের প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আনসার বাহিনীর সদস্যরাঃ স্বাধীণতা যুদ্ধের শুরুতেই অসংখ্য আনসার এতে যোগ দেয়। দেশের সর্বত্র তারা অংশগ্রহণ করে প্রতিরোধ যুদ্ধে। কিন্তু প্রতিরোধ যুদ্ধে টিকতে না পেরে স্বাধীনতাকামী অনেক আনসার কমান্ডার ও আনসার সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তাঁরা সঙ্গে নিয়ে যান রাইফেল, গুলি ও এলাকার আগ্রহী যুবকদের। সেখানে তারা যোগ দেন মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ শিবিরে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার দায়িত্ব নেন অসংখ্য আনসার কমান্ডার।


বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকারের প্রধানকে "Guard of Honor" প্রদান করেন আনসার বাহিনীর সদস্যরা। ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। এই সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধানকে প্লাটুন কমান্ডার ইয়াদ আলীর নেতৃত্বে ১২ জন আনসার সদস্য "গার্ড অব অনার" প্রদান করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে এটি এক অনন্য সাধারণ ঘটনা।


মুক্তিযুদ্ধে আনসার সদস্যদের আত্মত্যাগঃ

মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে আনসার বাহিনীর ৯ কর্মকর্তা, ৪ কর্মচারীসহ মোট ৬৭০ জন আনসার সদস্য শাহাদতবরণ করেন।

বীরত্বপূর্ণ খেতাবও স্বাধীনতা যুদ্ধে দুঃসাহসিক অবদানের জন্য যুদ্ধ পরবর্তী সরকার ০১ জন আনসার সদস্যকে বীর বিক্রম ও ০২ জন আনসার সদস্যকে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করেন। তাদের নাম নিম্নোক্ত সারণীতে উল্লেখ করা হলোঃ

 বীরত্বপূর্ণ খেতাব খেতাবধারী আনসার সদস্যের নাম মন্তব্য


বীর বিক্রম

১. চাঁদপুরের কমান্ডার এলাহীবক্স পাটোয়ারী

স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন।

বীর প্রতীক

২. মাগুরার কমান্ডার গোলাম এয়াকুব

পরবর্তীতে মারা যান।

৩. মেহেরপুরের আনসার ওয়ালিউল হোসেন

স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন।