Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সারাবছর বিভিন্ন ট্রেনিং পরিচালনার মাধ্যমে সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে অোসছে। ভবিষ্যতেও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে সদস্যদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দক্ষজনবলে পরিণত করে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ণে কাজ করে যাওয়া। এছাড়া ও সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থায় দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশের ও বাহিনীর সুনাম বয়ে আনা। আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা সারাদেশের বিভিন্ন  স্থানে সততা ও বিশ্বস্থতার সহিত দায়িত্ব পালন করছে।


আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর দায়িত্ব পালনঃ

ক। দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই) যেমন-জাতীয় সংসদ ভবন, বাংলাদেশ বেতার, সেতু ভবন, কেন্দ্রীয় কারাগার, বাংলাদেশ সচিবালয়, মুজিব নগর জাদুঘর, ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট ইত্যাদির নিরাপত্তা বিধানে এ বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিশেষ চিরুনী ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে পুলিশের সাথে কাজ করছে। এছাড়া অপারেশন উত্তরণের আওতায় সেনাবাহিনীর সাথে যৌথভাবে পার্বত্য এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা, দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে সন্ত্রাস দমন, রোহিঙ্গা-শরণার্থী শিবিরে শৃঙ্খলা বজায়, র‍্যাব (RAB) ফোর্সের অংশ হিসেবে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী অভিযানে অংশগ্রহণ, এসএসএস (SSF) এর সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা প্রদানে এ বাহিনীর সদস্যরা প্রশসংনীয় ভূমিকা আরও বেশি পালন করতে পারে সেই প্রত্যাশা ব্যাক্ত করছি। বিভিন্ন জেলায় ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে মোবাইল কোর্ট এবং ভোক্তা অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনায় আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যগণ সহযোগীতা করে থাকে।


খ। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যগণ পূজা, উৎসব, পূন্যস্থান, বিশ্ব ইজতেমা, নির্বাচন ছাড়াও রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে স্বল্পকালীন মোতায়েন হয়ে থাকে। শারদীয় দূর্গাপূজা উৎসবের পূজা মন্ডপের সার্বক্ষনিক নিরাপত্তায় আনসার ভিডিপি সদস্য মোতায়েন থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় অবদান রেখে চলেছে এবং ভবিষ্যতেও যেন আরও রাখতে পারে।

এছাড়া জাতীয় সংসদসহ বিভিন্ন নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বিশেষ করে মহিলা আনসার সদস্য মোতায়েনের ফলে নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতে মহিলা ভোটারের উপস্থিতি বর্তমানে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

উল্লেখ্য, রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতিতে জনজীবন স্বাভাবিক রাখার প্রয়াসে রেলপথ, সড়কপথ, নৌপথ ইত্যাদি সুরক্ষিত রাখতে এ বাহিনীর মাঠ পর্যায়ের সদস্যরা ইতোপূর্বে সফলতার সহিত তাদের দায়িত্ব পালন করবে।


গ। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অন্যতম প্রাথমিক কাজ মানবসম্পদ উন্নয়ন। প্রায় ৬১ লক্ষ সদস্য নিয়ে গঠিত বাহিনী জনসংখ্যার একটি বড় অংশকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং তাদের বেশিরভাগই গ্রামীণ এবং সমাজের স্বল্পতম আয়ের অংশ থেকে আসে। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী তার এই বিশাল সদস্যদের বৃত্তিমূলক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান করে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের ঋণ প্রাপ্তিতে সহায়তা পূর্বক আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে মানব সম্পদে রূপান্তরে বদ্ধ পরিকর। এ লক্ষ্যে আনসার গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী একাডেমি, ভিটিসি, টিটিসি, জেলা পর্যায়ের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহে বিভিন্ন মৌলিক, বিশেষ, কারিগরি ও পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ  যেন আরও বেশি আয়োজন করতে পারে।


ঘ। ক্রীড়া ক্ষেত্রে: ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। খেলাধূলার চর্চা ও জাতীয় ক্রীড়া বিকাশে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৪ সালে এ বাহিনী স্বাধীণতা পদক লাভ করে। নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও তৃণমূল পর্যায় থেকে প্রতিভাবান খেলোয়াড় বাছাইয়ের ফলস্বরুপ এ বাহিনী ১৯৯২,১৯৯৬,২০০২,২০১৩ এবং ৯ম বাংলাদেশ গেমস-২০২০ এ টানা পঞ্চম বারের মতো চ্যাম্পিয়ান হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এই বিজয়ের ধারা যেন অব্যাহত থাকে।


ঙ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভূমিকা: বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মানবসৃষ্ট মোকাবেলায় এ বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২, স্থায়ী দূর্যোগ নির্দেশিকা (SOD)-২০১৯ এ বাহিনীর দূর্যোগ ব্যবস্থায় ভূমিকাকে সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে সারা দেশ ব্যাপী এ বাহিনীর বিস্তৃতি থাকার কারণে যেকোন দূর্যোগে এ বাহিনীর সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। তাদের দুর্যোগ সংক্রান্ত কর্মকান্ডের মধ্যে রয়েছেঃ


* সতর্কীকরণ চিহ্নের প্রচার (publicity of warning signals)

◇ উচ্ছেদ, নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখা (Evacuation, security, law and order situation maintain)

❖ উদ্ধার ও পুর্নবাসন কাজ (Rescue and rehabilitation works)

* জনসচেতনতা সৃষ্টি (Create Public awareness)

বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, অগ্নিদূর্ঘটনা বা যে কোনো মহামারীর মতো দুর্যোগের সময় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা অন্যান্য সমন্ত সংস্থার সাথে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাজে অংশ নেয়।

দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রঃ

ক) নিরাপত্তা প্রদান: অঙ্গীভূত সাধারণ আনসার সদস্যগণ দেশের সরকারি-বেসরকারি শিল্প-প্রতিষ্ঠান, লঞ্চ, বিমানবন্দর, রেলপথ, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, গ্যাস ফিল্ড, রেডিও ও টেলিভিশন কেন্দ্র, সরকারি সম্পত্তি, মার্কেট, হাটবাজার, যানবাহন, ব্যাংক, অর্থ-লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, সরকার ঘোষিত বিশেষায়িত এলাকায় স্থাপিত যে কোনো সরকারি-বেসরকারি শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও সরকার কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা/এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্ব যেন অধিক সততার সাথে নিশ্চিত করতে  পারে।


খ) স্বল্পকালীন মোতায়েন:

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যগণ পূজা, উৎসব, পূন্যস্থান, বিশ্ব ইজতেমা, নির্বাচন ছাড়াও রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে স্বল্পকালীন মোতায়েন হয়ে থাকে। শারদীয় দূর্গাপূজা উৎসবের পূজা মন্ডপের সার্বক্ষনিক নিরাপত্তায় আনসার ভিডিপি সদস্য মোতায়েন থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় অবদান রাখবে।

এছাড়া জাতীয় সংসদসহ বিভিন্ন নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বিশেষ করে মহিলা আনসার সদস্য মোতায়েনের ফলে নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতে মহিলা ভোটারের উপস্থিতি বর্তমানে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

উল্লেখ্য, রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতিতে জনজীবন স্বাভাবিক রাখার প্রয়াসে রেলপথ, সড়কপথ, নৌপথ ইত্যাদি সুরক্ষিত রাখতে এ

বাহিনীর মাঠ পর্যায়ের সদস্যরা ইতোপূর্বে সফলতার সহিত তাদের দায়িত্ব পালন করেছে ও ভবিষ্যতে ও করবে।

২। আনসার ব্যাটালিয়ন:

ক) আনসার ব্যাটালিয়ন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ১৯৭৬ সালে আগস্ট মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য বাহিনীর নিয়মিত ও স্থায়ী সদস্য। আনসার ব্যাটালিয়ন আইন-২০২৩ দ্বারা তারা পরিচালিত হয়। একটি গার্ড ব্যাটালিয়ন ও দুটি মহিলা ব্যাটালিয়নসহ সারা দেশে মোট ৪২ টি ব্যাটালিয়ন অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে অত্যন্ত দক্ষতা ও সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। মহিলা আনসার ব্যাটালিয়ন এই উপমহাদেশের কোনো বাহিনীতে প্রতিষ্ঠিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ মহিলা ব্যাটালিয়ন। ব্যাটালিয়ন আনসাররা কন্ধ্যাট পোষাক পরিধান করে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে "অপারেশন উত্তরণ" - এ ১৬টি ব্যাটালিয়ন মোতায়েন রয়েছে। সমতল এলাকায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ বিভিন্ন অভিযানিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যরা। দেশের অন্যান্য বাহিনীর মতো তারাও সব ধরেেনর সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে।


খ) আনসার ব্যাটালিয়ন আইন, ২০২৩ অনুযায়ী আনসার ব্যাটালিয়নের দায়িত্ব ও কার্যাবলি:

এই আইনের অনুচ্ছেদ ৭ অনুযায়ী- আনসার ব্যাটালিয়নের দায়িত্ব ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:

(i) জননিরাপত্তামূলক কোনো কাজে সরকার বা সরকারের অনুমোদনক্রমে সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী

দায়িত্ব সম্পাদনে সহায়তা:

(ii) দুর্যোগ মোকাবিলায় ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক নির্দেশিত জনকল্যাণমূলক কার্যে অংশগ্রহণ;

(iii) সরকারের নির্দেশে যে কোনো প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার নিরাপত্তা প্রদানে সহায়তা:

(iv) সরকারের নির্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তা প্রদানে সহায়তা:

(v) উপরিউক্ত বিধানের সামগ্রিকতাকে ক্ষুন্ন না করিয়া, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, নিম্নবর্ণিত বাহিনীসমূহকে সহায়তা

প্রদান, যথা:--

(অ) বাংলাদেশ সেনাবাহিনী:

(আ) বাংলাদেশ নৌবাহিনী;

(ই) বাংলাদেশ বিমানবাহিনী

(ঈ) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ: ও

(উ) বাংলাদেশ পুলিশ:

(চ) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, অর্পিত অন্য যে কোনো দায়িত্ব সম্পাদন।